জঙ্গলমহল থেকে কেন সরানো হল, কমিশনের বিরুদ্ধে আদালতে ভারতী ঘোষ

জঙ্গলমহল থেকে কেন সরানো হল, কমিশনের বিরুদ্ধে আদালতে ভারতী ঘোষ

ভোটের ফলাফল প্রকাশ হতেই নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংঘাতে আইপিএস ভারতী ঘোষ। কোনও কারণ না দেখিয়ে তাঁকে জঙ্গলমহলের ওএসডির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এই অভি‌যোগ ভারতী মামলা করলেন কলকাতা হাইকোর্টে।

নির্বাচন কমিশনের কোপে পড়ে রাজ্যে একাধিক আইপিএস, আইএএসকে বদলি হয়ে ‌যান। তাঁদের মধ্যে কেউই এখনও প‌র্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হননি। কিন্তু আদালতে গেলেন আইপিএস ভারতী ঘোষ। তাঁর অভি‌যোগ, কোনও অনুসন্ধান না করেই তাঁকে জঙ্গলমহলের ওএসডি-র পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভি‌যোগের তদন্ত ‌যদি হয়েও থাকে তাহলে তা তাঁকে জানানো হয়নি বলে অভি‌যোগ করলেন ভারতী।
উল্লেখ্য, গত ১৯ মার্চ জঙ্গলমহল থেকে ভারতী ঘোষকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সিআইডির এসএস পদে। শুধু তাই নয় জঙ্গলমহল থেকে ওএসডির পদটাই তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয় কমিশন।
রাজ্যে নির্বাচন ঘোষণার পর থেকেই দফায় দফায় জেলা শাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু দেখা ‌যায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের রিপোর্টের সঙ্গে রাজ্যের এসপিদের দেওয়া রিপোর্ট মিলছে না। তার পরই একের পর এক এসপিকে বদলি করে দেয় কমিশন। সেই বদলির কোপে পড়ে ‌যান ভারতী ঘোষ। তাঁর বিরুদ্ধে কী অভি‌যোগ ছিল তা তাঁকে জানানো হয়নি বলে তিনি অভি‌যোগ করেছেন। তবে রাজ্য প্রাশাসনিক মহলের খবর মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিতি রয়েছে ভারতীর।

''বড় হওয়াতেই হার'' পরাজিতদের বললেন তৃণমূল নেত্রী মানুষের পাশে থাকুন, বললেন নেত্রী

''বড় হওয়াতেই হার'' পরাজিতদের বললেন তৃণমূল নেত্রী মানুষের পাশে থাকুন, বললেন নেত্রী

বিরোধীদের সমস্ত অপপ্রচার রুখে দিয়ে জয় পেয়েছে দল l বিপুল এই জয়ে প্রমাণিত হয়েছে, এ রাজ্যে কোনও দুর্নীতি নেই l বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর এমনই জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় l আর সেই বিপুল জয়ের পরদিন-ই কালীঘটে দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী l সেখানে যেমন ভালো কাজ এবং জয়ের জন্য বিধায়কদের অভিনন্দন জানালেন l তেমন, যাঁরা পরাজিত হয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও কিছুটা উষ্মা প্রকাশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় l

তিনি বলেন, ”যাঁরা হেরেছেন, তাঁরা অনেক বড় হয়ে গিয়েছিলেন l তাই মানুষ তাঁদের প্রত্যাখান করেছে l” অর্থাত, শুক্রবারের দলীয় বৈঠকে নেত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, মানুষের জন্যই এই জয় l তাই, মানুষের সঙ্গে থেকে আগামী দিনে কাজ করতে হবে l সাধারণ মানুষের সুবিধা অসুবিধার কথা ভেবেই সব করতে হবে বলেই দলীয় বৈঠক থেকে বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী l
পাশপাশি, ভোটের ফল বেরোনোর পর থেকে জেলা থেকে যে সমস্ত অশান্তির খবর আসতে শুরু করেছে, তা বন্ধ করতে শিগগির ব্যবস্থা নিতে হবে l অশান্তি বন্ধ করতে দলীয় বিধায়কদের বার্তাও দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী l
এদিকে, ভোটের ফল বেরোনোর পর থেকেই আলিমুদ্দিনের অন্দরমহলে অসন্তোষ শুরু হয়ে গিয়েছে l জোট করেই এবার ভরাডুবি হয়েছে বলেই মত দলের একাংশের নেতাদের l আর সেই কারণেই শনিবারের রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীর বৈঠক বাতিল করা হয়েছে বলে খবর l কিনতু, ফল বেরোনোর পর থেকে জেলা জুড়ে সন্ত্রাস শুরু হয়েছে l তার জন্য জেলা নেতারা বৈঠকে হাজির হতে পারবেন না বলেই বৈঠক বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিমান বসুরা l
ভোটের ফলপ্রকাশের পর উত্তপ্ত রাজ্য, ভাঙচুর মৌসুমী-টুম্পার বাড়িতে, আক্রান্ত শাসকও

ভোটের ফলপ্রকাশের পর উত্তপ্ত রাজ্য, ভাঙচুর মৌসুমী-টুম্পার বাড়িতে, আক্রান্ত শাসকও

ভোটের ফলপ্রকাশের পরই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় জেলায় উত্তেজনা। সিপিএম-কংগ্রেস-এর অভিযোগ ফল ঘোষণার পরই বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের ওপর রাজনৈতিক হামলা চালাচ্ছে তৃণমূল। হামলা চালানো হয়েছে কামদুনিকাণ্ডের প্রতিবাদী মুখ মৌসুমী কয়াল-টুম্পা কয়ালের বাড়িতেও। এদিকে, পরাজয়ের পর আক্রান্ত শাসকও। উত্তপ্ত নানুর। গুলিবিদ্ধ ২ তৃণমূলকর্মী। মারধরে আহত ১। পুরুলিয়ায় খুন তৃণমূলকর্মী। ধৃত কংগ্রেসকর্মী, পলাতক ৩।
after poll clash 1
একনজরে দেখে নেওয়া যাক ভোটের ফলপ্রকাশের পর রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার খণ্ডচিত্র
• হাড়োয়া বিধানসভায় তৃণমূল প্রার্থীর জয়ের পরেই কামদুনির কয়াল পাড়ায় স্থানীয় ক্লাবে ভাঙচুর, লুঠপাট চালানোর অভিযোগ। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। অভিযোগ, গতকাল ভোটের ফল ঘোষণার পরেই ৩০-৪০ জন তৃণমূলকর্মী কামদুনিকাণ্ডের মূল প্রতিবাদী মুখ টুম্পা ও মৌসুমী কয়ালের বাড়িতে ভাঙচুড় চালায়।
• ভোটের ফল ঘোষণার পরেই হুগলির চুঁচুড়ার একাধিক জায়গায় আক্রান্ত সিপিএম। অভিযোগ, চুঁচুড়া পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ঝাঁপপুকুরে সিপিএমকর্মী কার্তিক মালাকার ও সুনীল দেবনাথের বাড়িতে চড়াও হয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় তৃণমূলকর্মীরা। দুই সিপিএমকর্মী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি, ব্যান্ডেলের মেরি পার্ক এলাকায় সিপিএম নেতা শিবাজী মিত্রর বাড়িতে বাইক বাহিনীর তাণ্ডব। ভাঙচুর করা হয় বাড়ি। ব্যান্ডেলেরই বালির মোড়ে সিপিএম কার্যালয়েও তৃণমূলকর্মীরা ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। যদিও সিপিএমের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা বলে দাবি শাসকদলের।
• আসানসোলের জামুড়িয়ায় সিপিএম প্রার্থীর জয়ের পরেই দিকে দিকে হামলার অভিযোগ। অভিযুক্ত তৃণমূল। অভিযোগ, আজ সকালে প্রায় ৩০ জন তৃণমূলকর্মী সিপিএমের জোনাল সম্পাদক মনোজ দত্তর বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাও ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। সিপিএমের দাবি, গতকাল ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই জামুড়িয়ার একাধিক এলাকায় তাদের ওপর হামলা হলেও, পুলিশ নিষ্ক্রিয়।
• বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীর জয়ের পরেই শাঁখচূড়া বাজারে কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর, লুঠপাট, আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। যদিও তৃণমূলের দাবি, এই কেন্দ্রে জোট প্রার্থী হেরে যাওয়ায়, কংগ্রেস-সিপিএমের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা।
• পুরুলিয়ার পারা ও রঘুনাথপুর বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিএমের দুটি দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর, গুরুত্বপূর্ণ নথিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ। অভিযুক্ত তৃণমূল। অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল।
• কাশীপুর-বেলগাছিয়া কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীর জয়ের পরেই বেলগাছিয়া পশ্চিম লোকাল কমিটির অফিস ভাঙচুর। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে।টালা থানায় অভিযোগ দায়ের। তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।
• নানুর কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থীর জয়ের পরে এক তৃণমূল সমর্থকের মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ। অভিযোগের তির সিপিএমের দিকে। সিঙ্গি গ্রামের বাসিন্দা তৃণমূল সমর্থক লুত্ফা বিবিকে বেধড়ক মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সিপিএমকর্মীদের বিরুদ্ধে। প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক গদাধর হাজরার অনুগামী ওই তৃণমূল সমর্থককে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিপিএম।
• পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে তৃণমূল প্রার্থীর জয়ের পর সিপিএমের জোনাল অফিস ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, হেরে যাওয়ার পরে সিপিএমের লোকজনই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
• ভোটের ফল ঘোষণার পরেই এন্টালির গোবরা রোডে সিপিএমের জোনাল অফিস ভাঙচুর ও লুঠপাটের অভিযোগ। অভিযোগের তির তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দিকে। গতকাল সন্ধেয় সিপিএমের ওই জোনাল অফিসে ভাঙচুর চালিয়ে তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বিভিন্ন জিনিস লুঠপাট করে বলে অভিযোগ। পুলিশের সামনেই গোটা ঘটনা ঘটে বলে দাবি সিপিএম প্রার্থী দেবেশ দাসের। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী স্বর্ণকমল সাহা।
• উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরে তৃণমূল প্রার্থী জয়ী হওয়ার পরেই ১৪ নম্বর রেলগেটের কাছে সিপিএমের শাখা কমিটির অফিস ভাঙচুর। অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অস্বীকার শাসকদলের।
• দমদম উত্তর কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থীর জয়ের পরেই দিকে দিকে সন্ত্রাস। নিমতার এম বি রোডে সিপিএমের ২ নম্বর লোকাল কমিটির অফিস, শিবাচল রোডে বিরাটি পশ্চিম লোকাল কমিটির অফিস ও দুর্গানগর ঢালাই কারখানার কাছে পরপর দুটি শাখা অফিসে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ। সব ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত তৃণমূল। অভিযোগ অস্বীকার শাসকদলের।
• দুর্গাপুরের রানিগঞ্জ ও পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটু-র অফিস দখল করে নেওয়ার অভিযোগ। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। অভিযোগ, আজ সকালে রানিগঞ্জের ময়রা কোলিয়ারির সিপিএম পার্টি অফিস রাতারাতি রঙ করে দখল করে নেয় তৃণমূল। পাশাপাশি, পাণ্ডবেশ্বরের নবগ্রামে বেশ কয়েকজন সিপিএম সমর্থকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল।
• ভোটের ফলপ্রকাশের পরেই হুগলির চুঁচুড়ায় সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে উদ্ধার কৌটো বোমা। সকালে গোয়ালতুলিতে সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ের সামনে বোমা পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ ও বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড। গতকাল গোয়ালতুলির এই সিপিএম কার্যালয়টিতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলকর্মীদের বিরুদ্ধে। গতকালের ঘটনার পরে আজ বোমা উদ্ধার হওয়ায় আতঙ্কে স্থানীয় বাসিন্দারা। এছাড়াও, চুঁচুড়ার বিভিন্ন এলাকায় সিপিএম সমর্থকদের বাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
• পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ে সিপিএম প্রার্থী পরাজিত হওয়ার পরে দুটি লোকাল কমিটির অফিস দখল করে নেওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। নারায়ণগড়ের বাখরাবাদ বাজারে গতকাল বিজয় মিছিল করেন তৃণমূল প্রার্থী প্রদ্যু‍ৎ ঘোষ। এরপরই তৃণমূলকর্মীরা বাখরাবাদে একটি লোকাল কমিটির অফিস ও কুটকিতে শাখা কমিটির একটি অফিস দখল করে নেয় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের দাবি, প্রার্থী হেরে যাওয়ায় সিপিএম কর্মীরাই ক্ষোভে দলীয় কার্যালয়ে তৃণমূলের পতাকা ঝুলিয়ে দিয়েছে।
• যাদবপুর কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থীর জয়ের পরেই রণক্ষেত্র পঞ্চসায়রের শহিদ স্মৃতি কলোনি। সিপিএমের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর, সিপিএম সমর্থকদের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ। অভিযুক্ত তৃণমূল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি শুরু হয়। দু’পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে জখম হন ৩ পুলিশকর্মী। গুরুতর জখম ১। স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ দায়ের করেছে পঞ্চসায়র থানার পুলিশ। ঘটনায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে আলাদা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
• আসানসোলের জামুড়িয়ার সিপিএম প্রার্থী জয়ী হওয়ার পরেই তৃণমূলের তাণ্ডব। অভিযোগ, গতকাল প্রায় ৫০-৬০ জন তৃণমূল সমর্থক সশস্ত্র অবস্থায় কবি পাড়ায় প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক পেলব কবির বাড়ি-সহ পাঁচটি বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। ইটবৃষ্টিও হয়। ভাঙচুর করা হয় গাড়ি। অভিযোগ, এরপর চুরুলিয়ার হাটতলা, মণ্ডলপুর ও জামুড়িয়া বাজারে সিপিএমের তিনটি দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালায় তৃণমূল সমর্থকরা। মণ্ডলপুরে সিপিএমের দলীয় কার্যালয়টিতে আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয়। দমকলের একটি ইঞ্জিন গিয়ে আগুন আয়ত্বে আনে। তৃণমূল সমর্থকরা রাতভর সন্ত্রাস চালালেও, বারবার ডাকা সত্বেও পুলিশ আসেনি বলে অভিযোগ।
• ভোটের ফল ঘোষণার পরেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর দক্ষিণ কেন্দ্রের পঞ্চবটী মোড়ে সিপিএমের শাখা অফিস ভাঙচুর। অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আজ সকালে দেখা যায়, সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ের দরজা ভাঙা, ঘর লণ্ডভণ্ড। সোনারপুর থানায় অভিযোগ দায়ের। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
• ভোটের ফলপ্রকাশের পরেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের কংগ্রেস নেতার বাড়িতে দফায় দফায় হামলা। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। অভিযোগ, ভাঙড়ে তৃণমূল প্রার্থী রেজ্জাক মোল্লা জয়ী হওয়ার পরে গতকাল দুপুর থেকেই কংগ্রেস নেতা আবদুর রহমানের বাড়িতে চড়াও হয়ে দফায় দফায় ভাঙচুর চালায় তৃণমূলকর্মীরা। তাঁকে না পেয়ে তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মাকে হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। প্রাণভয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন কংগ্রেস নেতা। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছে তাঁর পরিবার।
• দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের শাহজাদাপুরে তৃণমূলকর্মীর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ। অভিযোগের তির এসইউসি-র দিকে। অভিযোগ, তৃণমূলকর্মী আবদুল মান্নান মোল্লার বাড়িতে আজ ভোরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এবার এই কেন্দ্রে জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থী। অভিযোগ, দীর্ঘ ৪০ বছর পরে আসনটি হাতছাড়া হওয়ায় এসইউসিকর্মীরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করেছে এসইউসি।
• ভোটের ফল ঘোষণার পর রাজারহাট-নিউটাউনে ২২ নম্বর ওয়ার্ডে তিন সিপিএম নেতার বাড়িতে ভাঙচুর, বোমাবাজির অভিযোগ। অভিযুক্ত তৃণমূল।ভোটে সিপিএম প্রার্থী নেপালদেব ভট্টাচার্যর পোলিং এজেন্ট হন লোকাল কমিটির দুই সদস্য সৌম্যকান্তি রায়, মিলন সিংহ ও সিপিএমের শাখা সম্পাদক অশোক বিশ্বাস।অভিযোগ, গতকাল এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী জয়ী হওয়ার পর, রাতে তিন সিপিএম নেতার বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি হয়। এরপর বাড়িতে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় কয়েকজন তৃণমূলকর্মী। নিউটাউন থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। যদিও হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল।
• দুর্গাপুর পূর্ব ও পশ্চিমে তৃণমূল প্রার্থী হেরে যাওয়ায় বেশ কয়েক জায়গায় প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। দফায় দফায় সংঘর্ষ। অভিযোগ, দুর্গাপুর পূর্বে তৃণমূল প্রার্থী হেরে যাওয়ার পরেই তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় দলেরই অপর গোষ্ঠীর লোকজন। দলীয় কর্মীদের তারা মারধরও করে। পাল্টা তৃণমূলের ব্লক যুব সভাপতি রাজীব ঘোষের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় দলের বিরোধী গোষ্ঠীর লোকজন। আহত হন দু’পক্ষের বেশ কয়েকজন। এই ঘটনায় কয়েকজন তৃণমূলকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। এর আগে দুর্গাপুর পশ্চিমে বেনাচিতিতেও গতকাল তৃণমূলের জেলা পার্টি অফিসে ঢুকে দলীয় কর্মীদের মারধর করার অভিযোগ ওঠে দলেরই আর এক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। ঘটনায় আহত হন তিনজন।
• পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায় তৃণমূল প্রার্থীর জয়ের পরেই সিপিআই-এর জোনাল কমিটির অফিস ও আরএসপি-র দলীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, বাম কর্মীদের মারধরের অভিযোগ। অভিযোগের তির তৃণমূলের। অভিযোগ, গতকাল সন্ধেয় সিপিআই-এর জোনাল কমিটির অফিসে কয়েকজন তৃণমূলকর্মী চড়াও হয়। এক সিপিআইকর্মীকে তারা বেধড়ক মারধর করে। ভাঙচুর করে আসবাব। পরে একইরকমভাবে হামলা হয় আরএসপি-র দলীয় কার্যালয়ে। হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
• পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডিতে তৃণমূলকর্মী খুন। অভিযোগের তির কংগ্রেসের দিকে। বাঘমুণ্ডি কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী নেপাল মাহাত জয়ী হওয়ায় গতকাল সন্ধেয় বিজয় মিছিল বের হয়। অভিযোগ, মিছিলে পটকা ফাটানোয় বাধা দিতে গেলে তৃণমূলকর্মী লক্ষ্মণ প্রামাণিককে বেধড়ক মারধর করে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। বাঁচাতে এলে লক্ষ্মণের ভাই-সহ আরও ৭ জন আহত হন। ঘটনায় কংগ্রেসকর্মী বরুণ সিং মুড়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পলাতক আরও তিন অভিযুক্ত। ঘটনার নিন্দা করে কংগ্রেসের বিজয়ী প্রার্থী নেপাল মাহাত জানিয়েছেন, দলের কেউ জড়িত থাকলে, তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
• ভোটের ফলপ্রকাশের পরেই ফের উত্তপ্ত বীরভূমের নানুর। কীর্ণাহারের কাছে গুলিবিদ্ধ ২ তৃণমূলকর্মী। অভিযোগের তির সিপিএমের দিকে। আজ সকালে গুলিবিদ্ধ হন প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক গদাধর হাজরার অনুগামী দুই তৃণমূলকর্মী। এদের মধ্যে বুরহান শেখ নামে এক তৃণমূলকর্মীর পাঁজরে গুলি লাগে। তাঁকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রাক্তন বিধায়ক গদাধর হাজরার দাবি, নানুরে সিপিএম প্রার্থী জয়ী হলেও, কীর্ণাহারের তিনটি অঞ্চলে ভাল ফল না করায় এই হামলা। অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিপিএম।
• ভোটের ফল ঘোষণার পরেই হুগলির জাঙ্গিপাড়ায় সিপিএমের দুটি দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর, একটিতে আগুন। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। গতকাল ফল ঘোষণার পরে ফুরফুরা শরিফ এলাকায় তৃণমূলকর্মীরা বিজয় মিছিল বের করেন। অভিযোগ, মিছিলকারীরা ফুরফুরা শরিফে সিপিএমের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়। এরপর তালতলায় সিপিএমের আরও একটি কার্যালয়ে তারা ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। যদিও হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল।
• দমদম উত্তর কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী পরাজিত হওয়ার পরেই নিউ ব্যারাকপুরে সিপিএম নেতার বাড়িতে ভাঙচুর। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে পাল্টা নিউ ব্যারাকপুর থানায় ব্যাপক ভাঙচুর চালায় তৃণমূলকর্মীরা। পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ও ইটবৃষ্টি। ইটের ঘায়ে জখম ওসি রাজু মুখোপাধ্যায়, এএসআই গোপাল বাগ ও দুজন সিভিক ভলান্টিয়ার। এই ঘটনায় এক তৃণমূল কাউন্সিলর ও এক তৃণমূল নেতা-সহ ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে একজন মহিলাও রয়েছে।
• ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার ফল ঘোষণার পরেই। অভিযোগ, গতকাল গভীর রাতে মাসুন্দা চণ্ডীতলা এলাকার বাসিন্দা সিপিএমের লোকাল কমিটির সদস্য মানিক দত্তগুপ্তর বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় তৃণমূলকর্মীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিচার্জ করে। এরপরই শহর তৃণমূল সভাপতি সুখেন মজুমদার ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মনোজ সরকারের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন তৃণমূলকর্মী নিউ ব্যারাকপুর থানায় চড়াও হয়। থানায় ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় তারা। পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে ইটবৃষ্টি। এমনকি গুলিও চালানো হয় বলে পুলিশের দাবি। ইটের ঘায়ে জখম হন ওসি-সহ এক পুলিশকর্মী ও ২ জন সিভিক ভলান্টিয়ার।
 ঠিক এই বয়সেই মেয়েরা কামিনী হয়!

ঠিক এই বয়সেই মেয়েরা কামিনী হয়!

গর্ভধারণের সম্ভাবনা যত কমে আসে তত বাড়তে থাকে যৌন উদ্দীপনা। সাম্প্রতিক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, উর্বরতার হার কমে এলে বেশির ভাগ নারীর মনে তীব্র যৌন আকাঙ্খা জাগে।


নিভে যাওয়ার আগে জ্বলে ওঠে দীপশিখা। তেমনই যৌবনের সূর্য কিঞ্চিত্‍ ঢলে পড়লে গতি পায় যৌনতা। ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস-অস্টিনের সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, ২৭ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নারীর মধ্যে যৌন কামনা তীব্রতম রূপে দেখা যায়। চিকিত্‍সাশাস্ত্র মতে, এই বয়সে নারীর সন্তানধারণের স্বাভাবিক ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে আসে। অথচ সেই সময় জেগে ওঠে প্রবল যৌন কামনা।

তিরিশ থেকে চল্লিশের কোঠায় পৌঁছনোর পর শ্লথ হয়ে পড়ে যৌবন-ঘড়ির কাঁটা। শরীরের সঙ্গে সঙ্গে মনও জানান দেয় আসন্ন প্রৌঢ়ত্বের হাতছানি। পুরুষদের ক্ষেত্রে এই সময় যেমন দেখা দেয় মিড-লাইফ ক্রাইসিস, নারীমনে ঠিক তখনই তীব্র যৌনতৃষ্ণার উদয় হয়। যৌবনের শেষ পর্বে এসে শরীরী উন্মাদনার প্রতিটি বিন্দু পান করতে সে মরিয়া হয়ে ওঠে। জীবনের এই সন্ধিক্ষণে শয়নে স্বপনে যৌন ইচ্ছা জাগে তো বটেই, অনেকে ঘন ঘন যৌন মিলন এমনকি কামতাড়িত হয়ে নিষিদ্ধ সম্পর্কের ফাঁদেও অনেকেই পা দেন।

মনোবিদ জুডিথ এডিসন জানিয়েছেন, 'কুড়ির শেষ থেকে মধ্য চল্লিশ পর্যন্ত মেয়েদের শরীরে সন্তানধারণের ক্ষমতায় ভাটা পড়ে। পাশাপাশি, যৌবনের মাঝ দরিয়ায় পৌঁছে তাঁরা হঠাত্‍ তীব্র যৌন উত্তেজনা বোধ করতে থাকেন।'

এই মানসিক পরিবর্তন প্রকৃতির নিয়ম মেনে জীবনে প্রবেশ করে, জানিয়েছেন মনোবিদ। জীবজগতের আদিম প্রবণতা অনুসারেই শরীর-মনে এই বিক্রিয়া ঘটে বলে তাঁর দাবি।
নারদ-কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি ২৯শে, চাপে তৃণমূল

নারদ-কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি ২৯শে, চাপে তৃণমূল

ভোটের মধ্যেই নারদ-কাণ্ড নিয়ে আরও চাপ বাড়ছে তৃণমূলের উপর।
কলকাতা হাইকোর্টের পর নারদ-কাণ্ড নিয়ে এ বার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হতে চলেছে। শুক্রবার ওই মামলার শুনানি হবে। একই সঙ্গে রাজ্যসভার এথিক্স কমিটি যাতে নারদ-কাণ্ডে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে, তা নিয়ে নতুন করে উদ্যোগী হল সিপিএম।

গত সপ্তাহেই নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূলের বিধায়ক ও সাংসদদের অপসারণ চেয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। আজ প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুরের সামনে এই বিষয়টি উল্লেখ করেন আইনজীবী অশোক ভান ও শুভাশিস ভৌমিক। যুক্তি দেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ দিকে পশ্চিমবঙ্গেও নির্বাচন চলছে। কাজেই দ্রুত বিষয়টির শুনানি হোক। প্রধান বিচারপতি শুক্রবার, ২৯ এপ্রিল এ বিষয়ে শুনানিতে সম্মত হন।
কলকাতা হাইকোর্টে নারদ-কাণ্ড নিয়ে ইতিমধ্যেই মামলা চলছে। তিন সদস্যের একটি কমিটি গড়ে দিয়েছে হাইকোর্ট। যেখানে নারদ নিউজের অধিকর্তা ম্যাথু স্যামুয়েল যাবতীয় অসম্পাদিত ভিডিও জমা দিয়েছেন। ম্যাথুর হলফনামা বিষয়ে অভিযুক্তদের কোনও বক্তব্য থাকলে তা ২৭ এপ্রিলের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলাকারী বিপ্লব চৌধুরী আবেদন জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা ও তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হোক। একইসঙ্গে তাঁদের বিধায়ক বা সাংসদ পদ খারিজ করে দেওয়ার জন্য নির্দেশ জারি হোক। ভবিষ্যতেও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিষেধাজ্ঞা জারি হোক।
তৃণমূলের অভিযুক্ত সাংসদদের সদস্যপদ খারিজ করাতে বদ্ধপরিকর সিপিএম-ও। লোকসভার ছ’জন সাংসদের বিরুদ্ধে এথিক্স কমিটি তদন্ত শুরু করলেও রাজ্যসভার এথিক্স কমিটিতে বিষয়টি পাঠানো হয়নি। বাজেট অধিবেশনের প্রথমার্ধে এ বিষয়ে সীতারাম ইয়েচুরি প্রশ্ন তোলায় ডেপুটি চেয়ারম্যান পি জে কুরিয়েন যুক্তি দিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার রাজি না হলে তাঁর কিছু করার নেই।
আজ রাজ্যসভার এথিক্স কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে সরব হন ইয়েচুরি। যুক্তি দেন, কমিটি নিজেই তদন্ত শুরু করুক। বিশেষ করে এ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত মুকুল রায় নিজেই এথিক্স কমিটির সদস্য। মুকুল আজকের বৈঠকে হাজির ছিলেন না। বৈঠকে উপস্থিত কংগ্রেস বা বিজেপি সাংসদরাও এ বিষয়ে আপত্তি তোলেননি। কিন্তু কমিটির চেয়ারম্যান কর্ণ সিংহ যুক্তি দেন, বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করলেও নিয়ম অনুযায়ী রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তা কমিটির কাছে পাঠালেই তদন্তের কাজ শুরু করা সম্ভব।
বৈঠকের পরে ইয়েচুরি বলেন, ‘‘আমাদের মতে, নিয়ম অনুযায়ী কোনও বিষয় এথিক্স কমিটির কাছে পাঠাতে হলে সরকারি মতামতের প্রয়োজন নেই। আবার নরেন্দ্র মোদী থেকে বিজেপি নেতারা পশ্চিমবঙ্গে ভোটের প্রচারে গিয়ে বলছেন, রাজ্যসভার এথিক্স কমিটিতে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু কংগ্রেস-সিপিএম এ বিষয়ে সরব হয়নি। আমরা তাই নতুন করে সরব হব। রাজ্যসভায় বিষয়টি উত্থাপন করা হবে। দরকারে চেয়ারম্যানের কাছেও আলাদা করে চিঠি লেখা হবে।’’
জিত কার, অগ্নিপরীক্ষায় সিন্ডিকেট পাড়া

জিত কার, অগ্নিপরীক্ষায় সিন্ডিকেট পাড়া

এ যেন চোর-পুলিশ খেলা!

এক দিকে, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে পুলিশের তৎপরতা। আবার নিরাপত্তায় মোড়া সেই সব এলাকায় ভোট-পর্বে ‘কাজ হাসিল’ করার মরিয়া চেষ্টা সিন্ডিকেট বাহিনীর। রাজারহাট, নিউ টাউন, বিধাননগর — তিন বিধানসভা কেন্দ্রে সেই খেলাই শুরু হয়ে গিয়েছে শনিবার রাত থেকে।
নির্বাচন কমিশনের গুঁতোয় সে সব অঞ্চলে আদা-জল খেয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী। বিধাননগরে গত পুর-নির্বাচনে কালি লেগে গিয়েছিল পুলিশের ভাবমূর্তিতে। পুলিশের চোখের সামনে সে দিন তৃণমূল নেতাদের মদতে সল্টলেক জুড়ে দাপিয়ে বেরিয়েছিল বহিরাগত যুবকের দল। সে দিন ভোট দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন বিধাননগরের সাধারণ মানুষ। নির্বাচনের খবর করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন সাংবাদিকেরাও। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সেই ঘটনাকে ধিক্কার জানানো হয়েছিল। সমালোচনার মুখে পড়েছিল পুলিশের ভূমিকা। এ বার সেই কালি মুছতে মরিয়া পুলিশ। শেষ পর্বে, গত ২১ এপ্রিল উত্তর কলকাতার নির্বাচনের দিন কলকাতা পুলিশের তৎপরতা দেখে বিধাননগরের পুলিশও অনেকটাই সাহস পেয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন পুলিশকর্তারা। সে দিন কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় লাঠি মেরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে যত্রতত্র জটলা করা শাসক দলের সমর্থকদের। সেই পথ বেছে নিচ্ছে বিধাননগর কমিশনারেটও।
শনিবার রাতে কেষ্টপুরের একটি ক্লাবে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী অভিযান চালিয়ে দেখতে পায়, সেখানে তখন সবে মদের আসর শুরু হয়েছে। জনা ২০ যুবক বসেছেন আসর সাজিয়ে। পুলিশের অনুমান, সোমবার ভোটের ‘কাজ হাসিল’-এর পরিকল্পনা করতেই ওই সমাবেশ। সূত্রের খবর, তাদের কথা বলার বেশি সুযোগ না দিয়েই কার্যত পিটিয়ে মদের আসর বন্ধ করে পুলিশ। মঙ্গলবারের আগে সেই ক্লাবে জমায়েত না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এক পুলিশকর্তার দাবি, শুধু কেষ্টপুর নয়, রাজারহাট জুড়ে এমন যত ক্লাবে শনি ও রবিবার জমায়েত হয়েছিল, সিন্ডিকেটের যে সব ছোটখাটো ডেরায় রাতে আসর বসেছিল, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে সেই সব এলাকা ফাঁকা করে দিয়েছে পুলিশ। নিউ টাউনে এমন ১৮টি ক্লাবের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। আসর সাজিয়ে বসা এমন ৪৪ জনকে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে শনিবার রাতে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। শনিবার রাত থেকে রবিবার পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৩৫ জন গ্রেফতারও হয়েছে।
রাজারহাট, নিউ টাউন, সল্টলেক এলাকায় সব নির্মীয়মাণ বাড়িতেও হানা দিয়েছে পুলিশ। অভিযোগ, নির্বাচনের সময়ে এই সব বাড়িতে অনেক বাইরের লোক শ্রমিক সেজে থাকেন। নির্বাচনের দিন সকালে নিজেদের কাজ সেরে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরে যান। বিধাননগরের গত পুর-নির্বাচনেও এই ভাবে নির্মীয়মাণ বাড়িতে যুবকদের জড়ো করে রাতে চড়ুইভাতির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেই সব বাড়িতে গিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, শুধু যে শ্রমিকদের ওই এলাকায় বাড়ি, তাঁরা এবং বাড়ির দারোয়ান ছাড়া অন্য কেউ ওই বাড়িতে থাকতে পারবেন না।
রবিবার দুপুরে নিউ টাউনের চাঁদপুরে সিন্ডিকেটের চাঁই গফ্‌ফর মোল্লা ওরফে মাটি গফ্‌ফরের বাড়িতে ধাওয়া করে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী। গফ্‌ফরের বিরুদ্ধে এমনিতেই খুনের অভিযোগ ঝুলছে। তার উপরে অভিযোগ রয়েছে, সিন্ডিকেটের এই নেতা তৃণমূলের হয়ে ভোট করানোর পরিকল্পনা করে রেখেছেন। গফ্‌ফর শনিবার সকাল থেকেই বাড়িতে নেই বলে জানান তাঁর স্ত্রী আকলিমা বিবি।
গফ্‌ফরের মতো সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত যত চাঁই, যাঁরা এই ভোটে ‘সক্রিয়’ হতে পারে বলে আগাম খবর, তাদের এলাকাতেও হানা দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে। যেখানেই একসঙ্গে পাঁচ জন যুবকের জটলা দেখা গিয়েছে, সেখানেই তাড়া করা হয়েছে তাঁদের। তল্লাশির হাত থেকে বাদ যায়নি এলাকার হোটেল, গেস্ট হাউস, মেস। পুলিশ সূত্রের খবর, বেশ কয়েকটি গেস্ট হাউসে এমন সব অতিথি পাওয়া গিয়েছে, যাঁরা সেখানে থাকার যথেষ্ট কারণ দেখাতে পারেননি। তাঁদের পত্রপাঠ সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই সব গেস্ট হাউসের মালিক ও ম্যানেজারদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। সোমবার নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই সব গেস্ট হাউস ও হোটেলে আবার হানা দেওয়ার কথাও জানিয়েছে পুলিশ। বলা হয়েছে, এই তিন বিধানসভা এলাকায় ক্রমাগত টহল দিচ্ছে পুলিশের গাড়ি। তারাই মাঝেমধ্যে ওই হোটেল, গেস্ট হাউসে গিয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছে।
এই মারাত্মক চাপের মুখে পাল্টা ঘুঁটি সাজানোর মরিয়া চেষ্টাও চলছে। সেই কাজে শাসক শিবির অনেকটাই এগিয়ে। শোনা গিয়েছিল, কলকাতার বেশ কয়েক জন তৃণমূল কাউন্সিলর এ বার বিধাননগরে গিয়ে ভোট করাবেন। যেমনটি তাঁরা গত পুর-নির্বাচনে করিয়েছেন। কিন্তু শাসক দলের একাংশই বলছে, পুলিশের এই তৎপরতায় রীতিমতো কাঁপুনি ধরেছে শাসক শিবিরেও। ফলে রাস্তায় নেমে ভোট ‘করানোর’ খেলায় অনেকেই এখন ওয়াকওভার দিয়ে দিচ্ছেন। বিধাননগরে যেতে চাইছেন না অনেকেই। আশপাশের দুই জেলা থেকে যাঁরা বুকে সাহস নিয়ে রাস্তায় নামার পরিকল্পনা করেছেন, তাঁদেরও আড়ালে থেকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশঙ্কা, কোনও কারণে এঁদের কেউ ধরা পড়ে গেলে পরে নিজেদের এলাকায় এঁরা ভোট করাতে পারবেন না। তাতে আরও বিপদে পড়ে যাবে শাসক দল।
এত পুলিশি কড়াকড়ি সত্ত্বেও রবিবার বিকেলের পর থেকেই রাজারহাটের দশদ্রোণ, ইউনিটেকের কাছে বিভিন্ন বাড়িতে বহিরাগতদের এনে জড়ো করার অভিযোগ উঠেছে মূলত শাসক দলের বিরুদ্ধেই। বেশ কিছু জায়গা থেকে সংঘর্ষের খবরও আসতে শুরু করেছে। রাতের দিকে কিছু এলাকা থেকে বুথ দখলের চেষ্টা-সহ নানা ধরনের অভিযোগ আসতে থাকে। যেমন ভারতীয় বিদ্যাভবন স্কুলের বুথের ভোটারদের বাড়ি থেকে না বেরোনোর হুমকি দেওয়া অভিযোগ ওঠে এলাকার তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে। যদিও তৃণমূলের তরফে অভিযোগ নস্যাৎ করতে সময় লাগেনি। তবে নিরাপত্তার এই কড়াকড়ির মধ্যে বুথ দখল যে করা যাবে না, সে বিষয়ে নিশ্চিত শাসক দল। তাই প্রক্সি ভোট যথাসম্ভব নিশ্চিত করার কথা ভাবা হয়েছে। কিছু এলাকায় প্রকৃত ভোটারের ভোটার কার্ড তৃণমূলের নেতারা হস্তগত করে রেখেছেন বলে অভিযোগ। সঙ্গে চলছে পাড়ায় পাড়ায় হুমকি। এ সব অভিযোগও অস্বীকার করেছে তৃণমূল। দলের এক নেতা অবশ্য জানিয়েছেন, বিধাননগর কেন্দ্রের সল্টলেকে তাঁদের ভরাডুবি হবে বলে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছেন তাঁরা। ফলে বিধাননগর কেন্দ্রে জিততে হলে লেকটাউন ও দক্ষিণদাঁড়িতে বড় ব্যবধানে জিততে হবে। সেই কারণে ‘যা করার’ ওই দু’টি এলাকায় করতে হবে। কী করবেন? নেতার কথায়, ‘‘দেখুন না, সোমবার কী হয়।’’
সূত্রের খবর, আজ, সোমবার যে সব গাড়িতে কমিশনের আধিকারিকদের দাপিয়ে বেড়ানোর কথা, সেই গাড়ির চালকদেরও ‘বুঝিয়ে’ রাখা হয়েছে বলে নেতাদের দাবি। কোথাও কোনও ঘটনার অভিযোগ পেলে কমিশনের লোকজন ঘটনাস্থলে যাতে দেরি করে পৌঁছোন, তার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে ওই চালকদের হাতে।
জোটের মাস্টার স্ট্রোক, এক মঞ্চে বুদ্ধ-রাহুল?

জোটের মাস্টার স্ট্রোক, এক মঞ্চে বুদ্ধ-রাহুল?

নির্বাচনের শেষ পর্যায়ে এসে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং রাহুল গাঁধীকে এক মঞ্চে হাজির করে এ বার মাস্টার স্ট্রোক দিতে চাইছে জোট-শিবির।
প্রদেশ কংগ্রেস সূত্রে খবর, সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৭ এপ্রিল পার্ক সার্কাস ময়দানের সভায় হাজির থাকবেন ওই দুই নেতা। সিপিএমের তরফে জানানো হয়েছে, বুদ্ধদেববাবু ওই সভার বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছেন।
জোট প্রার্থীদের সমর্থনে ভোটপ্রচারে দু’পক্ষের শীর্ষ নেতৃত্বকে এক মঞ্চে হাজির করতে গোড়া থেকেই তত্পর হয়েছিল কংগ্রেস। প্রথম দিকে বামেদের তরফে তেমন একটা উত্সাহ দেখানো হয়নি। তবে, পরের দিকে জোট প্রার্থীদের প্রচারে কংগ্রেসের পাশে বাম নেতৃত্বকে দেখা গিয়েছে। এর আগে বংশগোপাল চৌধুরী বা গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেতাকে দেখা গিয়েছে রাহুলের বর্ধমানের সভায়। তাঁর বসিরহাটের সভায় দেখা গিয়েছে সিপিএম সাংসদ ঋতব্রত ভট্টাচার্যকেও। তবে, একই সভায় বুদ্ধদেববাবু এবং রাহুলের উপস্থিতি রাজ্য রাজনীতিতে যে অন্য মাত্রা এনে দেবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
গোড়া থেকেই বুদ্ধদেববাবু জানিয়েছিলেন, তিনি এ বারের প্রচারপর্বে অংশ নেবেন না। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা দলীয় কর্মীদের অনুরোধ সযত্নে সরিয়েও দিয়েছিলেন। একমাত্র ব্যতিক্রম গত ১৯ তারিখ ‘রোড-শো’। কসবা, টালিগঞ্জ এবং যাদপুরের জোটপ্রার্থীর সমর্থনে ওই রোড শোতে অংশ নেন তিনি। ঢাকুরিয়া থেকে গড়িয়া পর্যন্ত সেই রোড-শোতে কয়েক হাজার বাম কর্মী-সমর্থককে দেখা যায়।
সরকার গড়বে তারা

সরকার গড়বে তারা

এ বলে আমায় দেখ, তো ও বলে আমায়!
চতুর্থ দফা ভোট শেষ হওয়ার তখনও ঘণ্টাখানেক বাকি। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করলেন, তাঁর দল এই চার দফাতেই সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আসন নিজেদের ঘরে তুলে নিতে পেরেছে। এখনও দু’দফা ভোট বাকি রয়েছে। মমতার দাবি, ওই দুই দফায় যে ক’টি আসন পাওয়া যাবে তা ‘ম্যাজিক ফিগার’-এ বাড়তি সংখ্যা যোগ করবে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা হিসেব করে ফেলেছি। আপনারা ভোটের ফল প্রকাশ পেলে মিলিয়ে নেবেন।’’
তিনি যখন এই দাবি করছেন, তখন প্রায় একই সুরে কথা বললেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সোমবারের আগে পর্যন্ত যতগুলো আসনে নির্বাচন হয়েছে, সেখান থেকেই বাম ও গণতান্ত্রিক জোট ১০০-র বেশি আসন পাচ্ছে। মানুষের এই জোট ধীরে ধীরে ডাবল সেঞ্চুরির দিকে এগোচ্ছে। ১৯ মে-র পর ধর্ম নিরপেক্ষ নতুন গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’’ তাঁর আরও দাবি, মানুষের ভোট দেওয়ার যে প্রবণতা তাঁরা দেখছেন, তাতে তৃণমূল শেষ পর্যন্ত তিন অঙ্কে পৌঁছতে পারবে না।

চতুর্থ দফায় উত্তর ২৪ পরগনা এবং হাওড়ার ৪৯টি আসনে এ দিন ভোট ছিল। বিক্ষিপ্ত কিছু হিংসার অভিযোগ ছাড়া ভোট মিটেছে মোটামুটি শান্তিতেই। কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা আগের চেয়ে বেশি সক্রিয় ছিল বলে জানিয়েছে প্রধান বিরোধী দল সিপিএম। সূর্যবাবুর দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, প্রায় ১২৪০০টি বুথে নির্বাচন হয়েছে। তার মধ্যে বুথ দখল, ছাপ্পা দেওয়ার চেষ্টা, এজেন্টদের মেরে বার করে দেওয়া, ভোটারদের হুমকি দেওয়া, প্রার্থীকে আক্রমণ— এ সব যা ঘটনা ঘটেছে, তা সব মিলিয়ে মোট বুথের এক শতাংশের বেশি হবে না। তাঁর কথায়, ‘‘এই ভোটে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন মানুষ। প্রথম থেকেই আমরা এটা বলে আসছিলাম। এ বারের পর্বে এসে মানুষ আরও সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁরা কী চান।’’

সূর্যবাবু এ দিন আলাদা করে সেলাম জানিয়েছেন হালিশহরের দেবশ্রী ঘোষকে। তার তিন বছরের শিশুকন্যা আক্রান্ত হাওয়ার পর সে আধো আধো গলায় অভিযোগ জানিয়েছে, তার পরেও তার মা বলেছেন, ‘প্রাণ গেলেও তিনি বুথে গিয়ে ভোটটা দেবেন।’ এবং শেষ পর্যন্ত তিনি ভোট দিয়েছেন। সূর্যবাবুর কথায়, ‘‘এই মা-ই পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবাদের প্রতীক। তাঁকে সেলাম জানাচ্ছি। আর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর যদি বিবেচনা বোধ থাকে, তা হলে ওই শিশুটির মুখে অভিযোগ শোনার পর তার রাতের ঘুম উড়ে যাওয়ার কথা।’’ সেই সঙ্গেই তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে মুখ্যমন্ত্রী ব্যবস্থা নিন। আর না পারলে, ১৯ মে পর্যন্ত আমরা ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করব। তার পরে নতুন সরকার এই অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’’
২০০-র দাবি সূর্যর, ফুত্‍‌কারে ওড়ালেন মমতা

২০০-র দাবি সূর্যর, ফুত্‍‌কারে ওড়ালেন মমতা

কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হওয়ার পরেই রাজ্যে পালাবদল নিয়ে আশাবাদী হয়ে ওঠেন সূর্যকান্ত মিশ্র। সোমবার চতুর্থ দফা ভোটশেষে সিপিএমের সেই নেতাই, জোটের অন্যতম কান্ডারি, জোর গলায় দাবি করলেন তৃণমূল কংগ্রেসকে পরাস্ত করে, জোট আসছে ক্ষমতায়। সেই সূত্রেই তাঁদের লক্ষ্য যে ২০০, তা স্পষ্ট করেন। দাবি করেন, একশো আসন আগেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। 

'সন্ত্রাস' 'হুমকি'কে উপেক্ষা করে জোটকে ভোট দেওয়ার জন্য, বাংলার মানুষকে ধন্যবাদ জানাতেও ভোলেননি সিপিএমের এই নেতা। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সূর্যকান্ত বলেন, এ বারের ভোটটা শাসকদলের সঙ্গে নির্বাচকমণ্ডলীর। আমাদের লক্ষ্য এখন ২০০। 

বাম নেতার দু'শোর দাবি, ফুত্‍‌কারে উড়িয়ে দেন শাসকদলের সাংসদ মুকুল রায়। তাঁর পালটা কটাক্ষ, সূর্যবাবুরা যদি ২০০ আসনই পান, তা হলে কমিশনে এত এত অভিযোগ করছেন কেন?




মুকুলের দাবি, সূর্যকান্ত মিশ্র নিজেই হারবেন। তাঁর সঙ্গে তাঁর দলও পরাস্ত হবে। জোটের দু'শোর আশা উড়িয়ে, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির দাবি, নিরঙ্কুশ সংখ্যগরিষ্ঠা পেয়ে তৃণমূলই আবার রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় ফিরবে। 

অন্য দিকে, পাটুলির সভায় এদিনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, চতুর্থদফা পর্যন্ত যা ভোট হয়েছে, তাতে আমরাই সরকার গড়ব। বাকি দুটি দফায় বিরোধীদের সঙ্গে ব্যবধান আরও বাড়বে। তাঁর দাবি, গতবারের থেকে আসন আরও বাড়বে। 

দীর্ঘসময় ধরে ভোট করানোর জন্য এদিন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছেন শাসকদলের সুপ্রিমো।
মৃত্যুর পরে আপনার ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের কী হবে?

মৃত্যুর পরে আপনার ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের কী হবে?

আপনি চিরদিন বাঁচবেন না। সেটাই স্বাভাবিক। থেকে যাবে আপনার কীর্তিকলাপ। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং-এ আপনি কী করেছেন, তার খতিয়ান। কিন্তু ঠিক কী হয়?

ফেসবুক-এ এখন মৃত মানুষের ভিড়। বহু মানুষ মারা গিয়েছেন, কিন্তু তাঁদের অ্যাকাউন্টগুলি দিব্য রয়েছে বহাল তবিয়তে। যদিও ইউজারের মৃত্যুর ক্ষেত্রে একটি নিয়ম রয়েছে ফেসবুক-এর। ফেসবুক হয় পাকাপাকিভাবে সেই অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দেয়, নয়তো সেটিকে একটি মেমরিয়াল পেজ-এ পাল্টে দেয়। এ ক্ষেত্রে ফ্রেন্ড এবং ফ্যামিলি লিস্টে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা মৃত ব্যক্তির মেমোরিয়াল পেজ-এ পোস্ট করতে পারেন। ইউজার যদি কাউকে ‘লিগ্যাসি কনট্যাক্ট’ দিয়ে যান, তা হলে তাঁর মৃত্যুর পরে সেই ব্যক্তি আংশিকভাবে ওই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারবেন।
টুইটারে কোনও ইউজারের মৃত্যুর পরে তিনি যাঁকে অথরাইজ করে দিয়ে যাবেন, একমাত্র তিনিই ইউজারের মৃত্যুর কথা জানাতে পারবেন। তবে সেই ব্যক্তিকে ইউজারের মৃত্যুর পর্যাপ্ত প্রমাণ দিতে হবে। তবে ওই অ্যাকাউন্টে পরিবারের কোনও অধিকার থাকবে না।
ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলটিকে মেমোরিয়াল পেজ করে দেয়। তবে সেই অ্যাকাউন্টে কারও অ্যাকসেস থাকবে না।