নারদ-কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি ২৯শে, চাপে তৃণমূল

ভোটের মধ্যেই নারদ-কাণ্ড নিয়ে আরও চাপ বাড়ছে তৃণমূলের উপর।
কলকাতা হাইকোর্টের পর নারদ-কাণ্ড নিয়ে এ বার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হতে চলেছে। শুক্রবার ওই মামলার শুনানি হবে। একই সঙ্গে রাজ্যসভার এথিক্স কমিটি যাতে নারদ-কাণ্ডে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে, তা নিয়ে নতুন করে উদ্যোগী হল সিপিএম।

গত সপ্তাহেই নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূলের বিধায়ক ও সাংসদদের অপসারণ চেয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। আজ প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুরের সামনে এই বিষয়টি উল্লেখ করেন আইনজীবী অশোক ভান ও শুভাশিস ভৌমিক। যুক্তি দেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ দিকে পশ্চিমবঙ্গেও নির্বাচন চলছে। কাজেই দ্রুত বিষয়টির শুনানি হোক। প্রধান বিচারপতি শুক্রবার, ২৯ এপ্রিল এ বিষয়ে শুনানিতে সম্মত হন।
কলকাতা হাইকোর্টে নারদ-কাণ্ড নিয়ে ইতিমধ্যেই মামলা চলছে। তিন সদস্যের একটি কমিটি গড়ে দিয়েছে হাইকোর্ট। যেখানে নারদ নিউজের অধিকর্তা ম্যাথু স্যামুয়েল যাবতীয় অসম্পাদিত ভিডিও জমা দিয়েছেন। ম্যাথুর হলফনামা বিষয়ে অভিযুক্তদের কোনও বক্তব্য থাকলে তা ২৭ এপ্রিলের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলাকারী বিপ্লব চৌধুরী আবেদন জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা ও তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হোক। একইসঙ্গে তাঁদের বিধায়ক বা সাংসদ পদ খারিজ করে দেওয়ার জন্য নির্দেশ জারি হোক। ভবিষ্যতেও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিষেধাজ্ঞা জারি হোক।
তৃণমূলের অভিযুক্ত সাংসদদের সদস্যপদ খারিজ করাতে বদ্ধপরিকর সিপিএম-ও। লোকসভার ছ’জন সাংসদের বিরুদ্ধে এথিক্স কমিটি তদন্ত শুরু করলেও রাজ্যসভার এথিক্স কমিটিতে বিষয়টি পাঠানো হয়নি। বাজেট অধিবেশনের প্রথমার্ধে এ বিষয়ে সীতারাম ইয়েচুরি প্রশ্ন তোলায় ডেপুটি চেয়ারম্যান পি জে কুরিয়েন যুক্তি দিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার রাজি না হলে তাঁর কিছু করার নেই।
আজ রাজ্যসভার এথিক্স কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে সরব হন ইয়েচুরি। যুক্তি দেন, কমিটি নিজেই তদন্ত শুরু করুক। বিশেষ করে এ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত মুকুল রায় নিজেই এথিক্স কমিটির সদস্য। মুকুল আজকের বৈঠকে হাজির ছিলেন না। বৈঠকে উপস্থিত কংগ্রেস বা বিজেপি সাংসদরাও এ বিষয়ে আপত্তি তোলেননি। কিন্তু কমিটির চেয়ারম্যান কর্ণ সিংহ যুক্তি দেন, বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করলেও নিয়ম অনুযায়ী রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তা কমিটির কাছে পাঠালেই তদন্তের কাজ শুরু করা সম্ভব।
বৈঠকের পরে ইয়েচুরি বলেন, ‘‘আমাদের মতে, নিয়ম অনুযায়ী কোনও বিষয় এথিক্স কমিটির কাছে পাঠাতে হলে সরকারি মতামতের প্রয়োজন নেই। আবার নরেন্দ্র মোদী থেকে বিজেপি নেতারা পশ্চিমবঙ্গে ভোটের প্রচারে গিয়ে বলছেন, রাজ্যসভার এথিক্স কমিটিতে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু কংগ্রেস-সিপিএম এ বিষয়ে সরব হয়নি। আমরা তাই নতুন করে সরব হব। রাজ্যসভায় বিষয়টি উত্থাপন করা হবে। দরকারে চেয়ারম্যানের কাছেও আলাদা করে চিঠি লেখা হবে।’’


EmoticonEmoticon