‘ছোটা ভীম’কে ভালবাসেন? জেনে নিন এই অ্যানিমেশনের জনপ্রিয়তার রহস্য

অ্যানিমেশন জগতের আর এক জনপ্রিয় চরিত্র পপাই-এর শক্তিবৃদ্ধি হত 'স্পিনাচ' বা পালংশাক খেলে। লাড্ডু খেয়ে ভীম-এর শক্তি বেড়ে যাওয়ার আইডিয়াটি সেখান থেকেই ধার করা। কিন্তু এক্ষেত্রে গোটা বিষয়টির ভারতীয়করণ ঘটেছে।

‘ছোটা ভীম’ অ্যানিমেশান সিরিজ শুধু ছোটদের নয়, বহু প্রাপ্তবয়স্কেরও মন জয় করেছে। কিন্তু এই সিরিজের উল্লেখযোগ্য দিক কোনগুলি যার জোরে এই বিপুল জনপ্রিয়তা? আসুন জেনে নিই—
১. মনকাড়া চরিত্র: ভীম, চুটকি, রাজু, জগ্গু, ডোলু, ভোলু এবং কালিয়া— প্রত্যেকেই টিভি স্ক্রিনে এখন অত্যন্ত জনপ্রিয় । চুটকি একটি ছোট্ট-মিষ্টি মেয়ে। রাজু ছোট ছেলে একটি— নেড়া মাথা, এবং ছোটখাটো চেহারা। জগগু বাঁদর হলেও তার জনপ্রিয়তাও কম কিছু নয়। কালিয়ার রঙ্গভঙ্গ নিয়ে অন্য বাচ্চারা সারাক্ষণ হাসিঠাট্টা করেই চলেছে। কিন্তু ঢোলু আর ভোলুর কাছে সেসব গ্রাহ্য নয়। তারা দুজন কালিয়ার চেলাগিরি করেই খুশি। বিভিন্ন মেজাজ ও মানসিকতার এই সমস্ত চরিত্র ‘ছোটা ভীম’-এর জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ।
২. টুনটুন মাসির হাতে তৈরি লাড্ডু: চুটকির মা তথা টুনটুন মাসির তৈরি করা এই লাড্ডুর বিশেষ গুণ রয়েছে। লোভনীয় চেহারার এই লাড্ডু খেয়েই ভীম গুন্ডা-বদমাশদের সঙ্গে লড়াই করবার শক্তি অর্জন করে। অ্যানিমেশন জগতের আর এক জনপ্রিয় চরিত্র পপাই-এর শক্তিবৃদ্ধি হত 'স্পিনাচ' বা পালংশাক খেলে। লাড্ডু খেয়ে ভীম-এর শক্তি বেড়ে যাওয়ার আইডিয়াটি সেখান থেকেই ধার করা। কিন্তু এক্ষেত্রে গোটা বিষয়টির ভারতীয়করণ ঘটেছে। স্পিনাচ-এর জায়গায় এসেছে লাড্ডু, যা ভারতীয় শিশুদের অত্যন্ত সাধের মিষ্টি। তা ছাড়া, কোনও অলৌকিক উপায়ে এক সাদামাটা ছেলের হঠাৎ শক্তিবৃদ্ধি, এবং তার জোরে দুষ্টের দমন— এই কাহিনি-পরিকল্পনা ছোট-বড় সকলের ফ্যান্টাসিকে উস্কে দিতে বাধ্য।
৩. একতাই শক্তি: বন্ধুত্বের মহিমাকীর্তন এই অ্যানিমেশন সিরিজের প্রধান কথা। মানসিকতার পার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু সিরিজের মূল চরিত্রগুলো সর্বদা ঐক্যবদ্ধ থাকে। আজকালকার দিনে বন্ধুত্বের এমন টান বোধহয় দুর্লভ। আর যা অলভ্য তার প্রতি মানুষের আকর্ষণ চিরন্তন। ‘ছোটা ভীম’-এর জনপ্রিয়তার এটাও একটা কারণ।
৪. ভালর জয় মন্দের পরাজয়: অথবা সত্যের জয়, অসত্যের পরাজয়। এটাও আজকের সমাজে চট করে দেখা যায় না। আর সমাজজীবনের যা অপ্রাপ্তি দর্শকের সেই মনোগত ইচ্ছাপূরণ যদি একটা টিভি সিরিজের মাধ্যমে ঘটে তাহলে তা জনপ্রিয় হতে বাধ্য।
৫. নীতিকথার সংযোজন: সনাতন ভারতীয় উপকথা বা রূপকথার মতোই কাহিনির মোড়কে নীতিশিক্ষার একটা ব্যাপার ‘ছোটা ভীম’-এ জুড়ে দেওয়া হয়েছে। সম্ভবত সেই কারণেই বাচ্চাদের এই সিরিজ দেখার ব্যাপারে বাবা-মারও অসম্মতি থাকে না।


EmoticonEmoticon